আসসালামু আলাইকুম পাঠক
আমি আজকে আলোচনা করবো খুবই গুরুত্বপুর্ন একটি বিষয় নিয়ে এবং সেটি হচ্ছে মুখের তেলতেলে ভাব দূর করে ত্বক আরো ফরসা ও লাবন্যময় করে তোলার কিছু ঘরোয়া টিপস :
চলুন দেড়ি না করে শুরু করা যাক।
প্রথমে কিছু কথা :
মুখের দাগ ছোপ বাদ দিয়ে পরিষ্কার এবং ফ্রেশ আমারা সকলেই রাখতে চাই। মুখ ফর্সা ও দাগহীন থাকুক এইটা সবারই কাম্য । তবে, ত্বক যখন খুব তেলতেলে হয় তখন সেক্ষেত্রে সমস্যাটি হয়ে ওঠে ব্যাপক। তবে সমস্যাটি শুধু মহিলাদেরই নয় পাশাপাশি পুরুষের মধ্যেও লক্ষ্য করা যায়। ত্বক যদি বেশি তেলতেলে হয় তবে সেক্ষেত্রে ব্রন, গোটা এবং নানা ধরনের স্কিন সমস্যা হয়ে থাকেই। এবং এই নিয়ে পুরুষ ও মহিলা উভয়ই খুব দুশ্চিন্তা ও করে থাকেন। পার্লারের অনেক প্রসাধনী ব্যাবহার করেন কিন্তু সেগুলো ত্বকের জন্য আরো বেশি ক্ষতিকর হয়ে উঠে। আর তাছাড়া পার্লারের কোনো প্রসাধনী কি আজও কোনো ভালো সমাধান দিতে পেরেছে??? কখনোই না। বরং এইগুলো আরো বেশি সমস্যার সিষ্টি করে।আর অধিকন্তু মানুষ এই সমস্যা সম্পরকে কিছু না বুঝেই নানা প্রসাধনী ব্যবহার করেন। প্রথমত মুখ তেলতেলে ও ছিপছিপে ভাব হওয়ার বেশ কিছু কারন রয়েছে। সেগুলো ১ বার দেখে নেওয়া যাক।
সম্পর্কিত পোস্ট: খুব সহজেই দূর করুন ব্রণ এবং ব্রণ এর দাগ
কারন :
১. মুখে অতিরিক্ত লোম থাকা।
২. মুখ পরিষ্কার না রাখা বা ময়লা জমে থাকলে।
৩. মুখ বেশি ঘামলে।
৪. হরমোন জনিত সমস্যা থাকলেও মুখ তেলতেলে হয়ে থাকে।
৫. অতিরিক্ত ঘাম যাদের হয় তাদের মুখ তেলতেলে থাকে বেশির ভাগ সময়ই এবং তাদের মধ্যেই ব্রনের সমস্যা টি বেশি দেখা দেয় কারন, ঘাম মুখের লোম কুপের মধ্যে প্রবেশ করে লোম কুপ বন্ধ করে দেয় এবং ময়লা জমে মুখে ব্রনের দেখা দেয়।
উপরের কারন গুলোর জন্যই একজন ব্যক্তির মুখে তেলতেলে ও ছিপছিপে ভাব হয় যা সাধারণত ব্রন ও অন্যান্য স্কিন সমস্যার মুল কারন। তাই স্কিন যাতে সবসময় তেলতেলে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং কিছু নিয়মাবলী মেনে চলতে হবে।
নিচে কিছু করনীয় আছে যেগুলো মেনে চললে তেলতেলে ভাব হওয়ার আশংকা অনেকটা হ্রাস পাবে।
চলুন করনীয় গুলো এক নজর দেখে নেওয়া যাক।
সম্পর্কিত পোস্ট: কনসিলার দিয়ে ঢেকে ফেলুন চোখের নিচের কালো দাগ ও মুখের দাগ
করনীয় :
স্কিন তেলমুক্ত রাখতে হলে অবশ্যই ৩ টি উপায় নিয়মত অবলম্বন করতে হবে।
সেগুলো হলো :
১. স্কিন ক্লিঞ্জিং
২. টোনিং
৩. মোইশ্চরাইজিং।
নিম্নে বিস্তারিত ব্যাখা দেওয়া হল :
১. স্কিন ক্লিঞ্জিং :
স্কিন ক্লিঞ্জিং বলতে মুলত মুখটাকে পরিষ্কারের ব্যপার টি কে বুঝি। আমরা ঘরোয়া উপায়ে ক্লিঞ্জিং বানিয়ে তা ব্যবহার করবো। তার জন্য আমাদের যা লাগবে তা হল – ১ চামচ বেসন, ১ চামচ মুলতানি মাটি, ১/২ চা চামচ কাচা হলুদ গুড়া। এই ৩ টি উপাদান ভালো করে মিশিয়ে তাতে ৪ চা চামচ গোলাপ পানি বা গোলাপ জল মিশিয়ে ১ টি পেস্ট বানিয়ে তা পরিষ্কার মুখে ভালোভাবে মেসেজ করে নিন ৫ মিনিট। তারপর ধুয়ে ফেলুন। এই সব গুলো উপাদান প্রাকৃতিক এবং এইগুলো তে কোনো পার্শপ্রতিকিয়া নেই বলে এইগুলো আমাদের স্কিনের জন্য উপকারি।
সম্পর্কিত পোস্ট: মুখের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর ঘরোয়া উপায়
২. টোনিং :
স্কিন ক্লিঞ্জিং এর পরের ধাপ হচ্ছে স্কিন টোনিং করা। টোনার ও আমরা ঘরোয়া উপায়ে বানিয়ে নিব। আমাদের স্কিন যদি সেন্সিটিভ হয় তাহলে আমরা গ্রিন টি টোনার ব্যবহার করবো। গ্রিন টি গরম পানি তে ১০ মিনিট রেখে দিয়ে তা ঠান্ডা হলে ভালোভাবে ছেকে নিয়ে স্প্রে বোতলে ভরে তা মুখে স্প্রে করুন এবং শুকাতে দিন এতে করে স্কিন এর ডেড সেলস দূর হবে। স্কিন সতেজ থাকবে। রিংকেলস আসবে না। আর যদি আমাদের স্কিন অয়লি হয় তবে আমাদের জন্য শসা এবং টমেটোর টোনার টি সবচেয়ে কার্যকর। শসার রস এবং টমেটোর রস ভালো করে মিক্স করে স্প্রে বোতলে ভরে মুখে স্প্রে করুন এতে মুখ পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত তেল ও চলে যাবে। আর যদি স্কিন ড্রাই হয় তাহলে গোলাপ জল ও মধুর টোনার টি খুব ভালো হবে। গোলাপ জলের সাথে ১/৩ চা চামচ মধু মিশিয়ে মুখে স্প্রে করে নিলে মুখের শুষ্কতা কমে যাবে এবং ফেস লাবন্য হবে।
৩. মোয়েশ্চরাইজিং :
মোয়েশ্চরাইজিং বলতে সাধারণত মুখে আমরে যেসকল ক্রিম নাইট ক্রিম ব্যবহার করে থাকি সেগুলো ব্যবহার করাটাই বুঝাচ্ছি। বর্তমানে বাজারে অনেক ভালো ব্রান্ডের ক্রিম বা নাইট ক্রিম পাওয়া যায় যেগুলো মুলত হারবাল। আমরা জানি হারবাল প্রোডাক্ট আমাদের জন্য ক্ষতিকর নয়। কেননা এতে অন্যান্য ব্রান্ডের চেয়ে পার্শপ্রতিক্রিয়া তুলনামূলক সামান্য থাকে যা ব্যবহারে ত্বকের ক্ষতির আশংখা থাকে না। যেমন : Lotus Night Cream , V7 tonight Light Cream , Himalaya Night Cream & Patanjali Night Cream , Dove Moistourizing Night Cream ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো অনেক আগে থেকে বাজারে ভালো সুনাম বয়ে আনছে এবং ক্রেতাদের মনও কেড়ে নিয়েছে। এই ক্রিম গুলো রাতে ঘুমাবার আগে মুখে ব্যবহার করুন এবং সকালে মুখ ভালোকরে ধুয়ে ফেলুন।
সম্পর্কিত পোস্ট: ব্রণের সমস্যায় কিছু কথা ও প্রতিকারের সহজ উপায়
উপরিউক্ত নিয়মাবলী মেনে চললে এবং ক্ষতিকর উপাদান বা প্রসাধনী ব্যবহার থেকে বিরত থাকলে মুখের তেলতেলে ভাব কমে যাবে । সেই সাথে ত্বক থাকবে উজ্জ্বল ও লাবণ্যময়।
আশা করছি আমার লেখাটি আপনাদের ভালো লাগবে এবং ভালো উপকার পাবেন। আপনাদের দোয়ায় আজকে বিদায় নিচ্ছি। তবে আবারো কথা হবে ভিন্ন কিছু সমস্যা এবং তার প্রতিকার নিয়ে। ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।