আমরা ব্রণ সমস্যায় ভুগি নি এরকম মানুষ খুব কমই আছি। পার্টিতে যাবেন অনেক টাকা খরচ করে সাজগোজ করলেন। কিন্তু আপনার সাজের চেয়ে ব্রণ বা ব্রণের দাগ গুলোই বেশি ফুটে উঠেছে। মনটাই খারাপ হয়ে গেল। এত চেষ্টা করার পর ও কিছুতেই দূর করতে পারছেন ব্রণ আর তার জেদি দাগ গুলো। আপনার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমাধান, একবার চেষ্টা করেই দেখুন।
কাঁচা-হলুদ ও চন্দন কাঠের গুঁড়াঃ সমপরিমাণ কাঁচা হলুদ বাটা এবং চন্দন কাঠের গুঁড়ো একত্রে নিয়ে এতে পরিমাণ মত পানি মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করুন। মিশ্রণটি এরপর ব্রণ এর উপর লাগিয়ে রেখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। এরপর শুকিয়ে গেলে মুখ ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই মিশ্রণটি শুধুমাত্র ব্রণদূর করার কাজ করে না বরং ব্রণের দাগ দূর করতেও খুবই কার্যকরী।
মুলতানি মাটিঃ অনেকের ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত। ত্বকের তৈলাক্ত ভাব ব্রণ এর জন্য অধিকাংশ সময় দায়ী।কারণ তৈলাক্ত গ্রন্থির তেল নিঃসরণ এর কারনে ব্যাকটেরিয়ার জন্ম হয়। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে এ সমস্যা বেশী দেখা যায়। মুলতানি মাটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ বন্ধ করতে সাহায্য করে।মুলতানি মাটি পানি দিয়ে পেস্ট করুন। মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। যতদিন না ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কেটে যাচ্ছে, নিয়মিত ব্যবহার করুন।
চা-গাছের তেলঃ ব্রণ নিরাময় ও প্রতিরোধে চা গাছের তেল অনন্য। এতে আছে পচনরোধী অ্যান্টি-সেপটিক ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান। কয়েক ফোঁটা চা গাছের তেল নরম টিস্যু তে নিয়ে ব্রণ আক্রান্ত স্থানে এবং দাগের মধ্যে আলতো করে লাগান। দেখবেন কয়েকদিনের মধ্যে সেরে উঠেছে।
আপেল ও মধুর মিশ্রনঃ আপেল পেস্ট করুন এবং তাতে ৫/৬ ফোটা মধু মেশান। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। একটু শুষ্ক হয়ে উঠলেই ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন একবার করে ১ সপ্তাহ ব্যবহার করুন। এক সপ্তাহ পর পরিবর্তনটা আপনিই লক্ষ করুন।
তুলসী পাতাঃতুলসী পাতা ব্রনের জন্য খুবই কার্যকরী। এতে রয়েছে আয়ূরবেদিক উপাদান। তুলসী পাতা পেস্ট করে ব্রনের উপর লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ৭ থেকে ৮ দিন নিয়মিত ব্যবহার করুন।
দারুচিনিঃদারুচিনি গুঁড়ার সাথে গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট করুন। এটি ব্রনের উপর লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ২০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। তাৎক্ষণিক ভাবে ব্রনের ফোলা ভাব এবং ব্যথা দূর করবে। নিয়মিত ব্যাবহারে ব্রণ নির্মূল করে। ৩ দিন ব্যবহার করার পর পরিবর্তন টা আপনি লক্ষ করুন।
ডিমের সাদা অংশঃডিমের সাদা অংশের সাথে কিছু লেবুর রস মিশান। মিশ্রণ টি ব্রণ আক্রান্ত স্থানে ম্যাসেজ করুন। আধা ঘণ্টা পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ১ সপ্তাহ ব্যবহার করুন।
পুদিনা পাতাঃআমরা অনেকেই জানিনা পুদিনা পাতা ব্রণ দূর করতে বেশ উপকারী। টাটকা পুদিনা পাতা বেটে পেস্ট করুন। ব্রণের উপর ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। যতদিন ব্রণ দূর না হয় ততদিন ব্যবহার করুন।
নিম পাতাঃ কয়েকটি নিম পাতা ভালো করে ধুয়ে পেস্ট করে নিন। এর মধ্যে এক চামচ মুলতানি মাটি, অল্প গোলাপ জল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন। প্যাকটা মুখে শুকিয়ে গেলে হালকা পানি দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলুন। ৭ থেকে ৮ দিন মুখে ব্যবহার করুন।
ব্রণ হবার একটি অন্যতম কারণ হলো অপরিষ্কার ত্বক। তাই ত্বক রাখতে হবে পরিষ্কার। যারা প্রতিদিন বাইরে বের হন, বাহির থেকে এসেই মুখ ভালোভাবে পরিস্কার করুন। ধুলাবালি মুখের লোমকূপ এর মধ্যে ঢুকে ব্রনের সৃষ্টি হয়। যতটা সম্ভব তেলজাতীয় এবং ফাস্টফুড খাবার পরিহার করুন। প্রতিদিন ৮ গ্লাস পানি পান করুন। আপনার ত্বক থাকবে সতেজ।
আর হ্যাঁ যারা অনেকদিন চেষ্টা করেও ব্রণ দূর করতে পারছেন না, অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।