শিশুকাল হল নৈতিকতা আর মূল্যবোধ শিক্ষা দেওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এ বয়সে শিশু যে শিক্ষাটি পেয়ে থাকে সেটি তার সারাজীবনে পথ চলার পাথেয়। নৈতিকতা, মূল্যবোধ এর শিক্ষাগুলো সারাজীবনের পথ চলা সহজ করে দেয়। শিশুর ৫ বছর বয়স থেকে নৈতিকতা ও মূল্যবোধের শিক্ষা দিতে হবে। আপনার আদরের সোনামণিকে শিক্ষা দিন কিছু গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক শিক্ষা।
সততাঃ
সাধারনত এই বয়সী শিশুরা খুব দ্রুত মিথ্যা কথা বলা শিখে। বকা খাওয়া বা মারধোরের হাত থেকে বাঁচতে কোন অপরাধ করলেও মিথ্যা কথা বলে। এই সব ছোট ছোট মিথ্যা বলতে বলতে এক সময় মিথ্যা কথা বলা স্বভাবে পরিণত হতে থাকে। এই জন্যে শিশু বয়সেই সত্য কথা বলার অভ্যাস করুন। শিশু কোন অন্যায় বা ভুলে করলে কথায় কথায় বকা দিবেন না বা তার গায়ে হাত তুলবেন না। এতে সে আপনার কাছ থেকে বাঁচার জন্য মিথ্যা বলবে। তাকে বুঝিয়ে বলুন যে সে যা করছে ভুল করছে। বাড়ীর বড়রা কখনো শিশুর সামনে মিথ্যা কথা বলবেন না।
ন্যায় বিচারঃ
আপনি ভাবছেন যে এ আর কি এমন বয়স যে ন্যায় বিচার শিক্ষা দিতে হবে। কিন্তু এই বয়সটাই তো শিখার বয়স। এখন না হলে পরে আর হবে না। এখন থেকেই আপনি আপনার শিশুকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিন কোনটি ভাল আর কোনটি মন্দ।
সম্মানঃ
মানুষকে সম্মান করার শিক্ষা দিন আপনার শিশুকে সে হোক বয়সে বড় গুরুজন বা ছোট। আপনার শিশু যেন ভবিষ্যতে কাউকে হেয় করে কিছু না করে সেই দায়িত্বটা এখন থেকেই নিতে হবে। আপনার বাসার কাজের লোকটিকে সম্মান করতে শিখান। শিশুর সামনে বাড়ীর গৃহকর্মীর সাথে খারাপ ব্যবহার করবেন না। এতে সে আপনার কাছ থেকেই শিক্ষা পাবে।
নম্রতাঃ
নম্রতা জীবনে চলার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটাকে হালকা করে দেখার কিছু নেই। খেয়াল রাখুন আপনার শিশু যেন খুব অল্পতেই রেগে না যায়। ধৈর্য রাখতে শিক্ষা দিন। আবার কোন সাফল্য পেলে যেন অহংকার না করে। তাকে নম্র হতে শিক্ষা দিন। দুঃখী মানুষের কষ্টে তার পাশে দাঁড়ানোর শিক্ষা দিন, সে যেন মানুষের কষ্ট দেখে খুশী না হয়।
দায়িত্ববোধঃ
শিশুকে তার দায়িত্ববোধ এর শিক্ষা দিন। নিজের কাজ নিজে করতে শিখান। নিজের খেলনা নিজেকে গুছিয়ে রাখতে হবে, নিজের দাঁত নিজে ব্রাশ করতে হবে, ছোট ভাই-বোন টির খেয়াল রাখতে হবে এগুল তাকে শিক্ষা দিন। এসব ছোট খাটো কাজ শিশুর মাঝে দায়িত্ববোধ জাগ্রত
ধৈর্যঃ
জীবনে সাফল্য পেতে গেলে ধৈর্য ধারণ করতেই হবে। এর বিকল্প কিছু হতে পারে না। আপনার শিশুটির মাঝে ধৈর্য ধারণ করার অভ্যাস করুন। কোন কাজে সাফল্য না আসলে হতাশ হতে বারণ করুন। ধৈর্য ধরে আবার চেষ্টা করতে বলুন।
ভালোবাসাঃ
শুধু বাবা, মা বা পরিবার এর সকল সদস্যের জন্য ভালোবাসা নয়। ছোট বড়, ধনী গরিব, পশু পাখি সবাইকে ভালবাসতে শিখান আপনার শিশুকে। সুবিধা বঞ্চিত শিশুদেরকে ভালবাসতে শিখান।
খেয়াল রাখুন আপনার শিশুর প্রতি। তার জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ যেন নৈতিকতা ও মূল্যবোধের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠে।