শিশু বয়স থেকেই থেকেই দাঁত ও মাড়ির প্রয়োজনীয় যত্ন খুব জরুরী। শিশুর যে কোন ভালো খারাপ সব কিছুর জন্য বাবা মায়ের যত্ন অবহেলাই বেশীরভাগ সময় দায়ী। অনেক সময় বাবা মায়ের অভ্যাস শিশুদের মধ্যে প্রভাব পড়ে। শিশুর সাথে সাথে তাই আপনাকেও কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। আমাদের আজকের লেখায় রয়েছে আপনার এবং আপনার শিশুর জন্য কিছু দরকারি টিপস।
শিশুর আগে নিজেরা সতর্ক হোনঃ
বাবা মা নিজেরা তাদের দাঁতের যত্ন না নিলে নিজেদের মাধ্যমে শিশুর দাঁতে সংক্রমণ হতে পারে। তাদের দাঁতের জীবাণু দ্বারা শিশুর দাঁতেও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হতে পারে। তাই মা-বাবা দু’জনেরই কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ মেনে চলা উচিত্।
১। আপনার শিশুর ভালোর জন্য সিগারেট বা নিকোটিনযুক্ত যে কোন ধরনের নেশা পরিত্যাগ করুন।
২। বাবা-মা দুজনেরই সঠিক পদ্ধতি মেনে দাঁত ব্রাশ করা উচিত্। যদি বিজ্ঞান্সম্মত পদ্ধতি না জানা থাকে তা হলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে ভাল করে বুঝে নিন।
৩। গর্ভবতী মায়ের যদি দাঁতে ব্যথা হয় তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে কোন ব্যথানাশক ওষুধ খাবেন না। এতে আপনার গর্ভস্থ শিশুর প্রাণহানি পর্যন্ত হতে পারে।
৪। ছোট বাচ্চার মুখে মুখ লাগিয়ে আদর করবেন না। এতে আপনার মুখের ব্যাকটেরিয়া শিশুর মুখে সংক্রমিত হতে পারে।
সদ্যোজাত শিশুর দাঁত ও মাড়ির যত্ন নিনঃ
১। জন্মের পর থেকেই শুরু করে দিন শিশুর মাড়ির যত্ন। খুব নরম কাপড় আঙ্গুলে জড়িয়ে খুব সাবধানে শিশুর মাড়ি পরিস্কার করুন।
২। লক্ষ করুন শিশুর মুখে কোন দুর্গন্ধ আছে কিনা তাহলে বুঝতে হবে যে মাড়িতে কোন সংক্রমণ ঘটেছে।
৩। শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় আপনি সতর্ক থাকুন। খেয়াল রাখুন আপনার স্তন এবং হাত যেন পরিস্কার থাকে।
৪। জন্মানোর পর থেকে যতদিন বুকের দুধ না ছাড়ে সে পর্যন্ত বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করুন। দুধের স্তর মাড়িতে শুকিয়ে শিশুর মাড়িতে ইনফেকশান হয়ে যেতে পারে। তাই নরম কাপড় দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার করা উচিত্।
শিশুর শৈশবকালীন এবং বয়ঃসন্ধির সময়ে দাঁত ও মাড়ির যত্ন ঃ
১। শিশু কথা বলা শুরু করলে ওরাল ক্রিম দিয়ে শিশুর মাড়ি মাসাজ করুন। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মাসাজ ক্রিম ব্যবহার করুন।
২। শিশুর দুধের দাত উঠতে শুরু করলে সব কিছুতেই কামড়ানোর চেষ্টা করে। তাই সংক্রমণের ভয় থাকে আরও বেশী। এই সময় শিশুদের মাড়ির উপযোগী নরম ব্রাশ দিয়ে ধীরে ধীরে ব্রাশ করানো শুরু করুন।
৩। ছোটবেলা থেকেই আপনার শিশুকে নিয়ম করে দিনে ২ বার সকালে ঘুম থেকে উঠার পর এবং রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে ব্রাশ করা শিখান।
৪। প্রতিদিন মাউথ ওয়াশ এবং ফ্লশিং করা ছোট বেলা থেকেই সেখানো উচিত্।
৫। যে সব শিশুরা একটু বেশি বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধ খায় তাদের দাঁতে ক্যারিজ হতে পারে। এই দাঁত গুলো তুলে না ফেলে সঠিক চিকিৎসা করার চেষ্টা করতে হবে। কারণ তুলে ফেললে পরে আবার দাঁত উঠার সময় অসুবিধা হয়।
৬। চকলেট অথবা চিনিজাতীয় খাবার খেয়ে মুখ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা শিখান আপনার শিশুকে।
শুরু থেকেই যত্নশীল ও সতর্কবান হোন আপনার শিশুর প্রতি। সুস্থ শিশুর নির্মল হাসিতে ভরে উঠুক আপনার মন।