দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। উৎসবের এই সময়ে ধনী-দরিদ্র সবার ঘরেই বিশেষ খাবার-দাবারের আয়োজন থাকে। সীমিত আয়ের মানুষেরাও সাধ্যমতো বাজার থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য কেনেন। তবে এসময়ে বাজারে যারা মাংস বা পোলাওয়ের চাল কিনতে গিয়েছেন, তাদের জন্য দুঃসংবাদ। কারণ, ঈদ ঘিরে বাজারে আগেভাগেই বেড়ে গেছে এসব ভোগ্যপণ্যের দাম। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে গত সপ্তাহে গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এদিন বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে। কোথাও কোথাও হাড়ছাড়া মাংস সাড়ে ৮০০ টাকায়ও বিক্রি হতে দেখা গেছে। অর্থাৎ, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতিতে গরুর মাংসের দাম ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে।
সেগুনবাগিচা বাজারের মাংস বিক্রেতা এনামুল হোসেন জানিয়েছেন, ঈদ সামনে রেখে গরুর দাম বেড়েছে। যে কারণে মাংসের দামও বাড়তি। কম দামে মাংস বিক্রি করে তাদের কোনো লাভই হয় না।
তিনি বলেন, আগে গরুর দাম কম ছিল, তাই আমরা কম দামে মাংস বিক্রি করেছি। এখন গরুর দাম বেশি, যে দামে কিনি সে হিসাবে বিক্রি করতে হয়।
মাংসের দাম বাড়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন বাজার করতে আসা রফিকুল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা। তিনি বলেন, বিক্রেতারা ইচ্ছে মতো মাংসের দাম নিচ্ছেন। কোথাও সাড়ে ৬০০, কোথাও ৭০০, কোথাও আবার ৮০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে। এগুলো দেখার কেউ নেই। বাজার তদারকির দুর্বলতার কারণে ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, ফেসবুকে দেখলাম মাংস না কেনার জন্য প্রচারণা চলছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা জানেন, ঈদের মধ্যে সবাই কম-বেশি মাংস কিনবেনই। তারা এখন সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়েছেন।
এদিকে, বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি আরও ২০ টাকা বেড়ে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে। একই সঙ্গে বেড়েছে সোনালি মুরগির দামও। সোনালি মুরগির কেজি উঠেছে ৩৩০-৩৫০ টাকায়।
মালিবাগ বাজারের মুরগি বিক্রেতা ইউনুস হোসেন বলেন, ঈদের কারণে মুরগির চাহিদা বেড়ে গেছে। সে তুলনায় সরবরাহ কম। গত তিনদিন ধরে প্রতিদিনই পাইকারি বাজারে মুরগির দাম পাঁচ-দশ টাকা করে বাড়ছে।
ঈদে আরেক প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য পোলাওয়ের চাল। রমজান মাসের শুরু থেকে ১-২ টাকা করে বেড়ে এখন খোলা চিনিগুড়া ১২৫ থেকে মানভেদে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেটজাত চাল ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
সেগুনবাগিচা বাজারে বিসমিল্লাহ জেনারেল স্টোরের কর্ণধার আবু সাইদ বলেন, গত এক মাসের তুলনায় বিবেচনা করলে পোলাওয়ের চাল কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে।
তবে বাজারে শাকসবজির দাম নতুন করে বাড়তে দেখা যায়নি। ঈদের কারণে ধীরে ধীরে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। যে কারণে বাজারে শাকসবজির চাহিদাও কমেছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।