অন্যসব রোগের মতই মানসিক রোগগুলো যেকোনো বয়সের মানুষের হতে পারে। অজ্ঞতার কারণে সমাজে মানসিক রোগাক্রান্ত মানুষের প্রতি বিরূপ ধারনা পোষণ করা হয়। এটা মোটেও উচিৎ নয়। অন্যসব রোগের যেমন চিকিৎসা আছে তেমনি মানসিক রোগেরও চিকিৎসা আছে। সময়মত সঠিক চিকিৎসা গ্রহন করলে মানসিক রোগ পুরোপুরি নিরাময় করা সম্ভব।
মানসিক রোগীদের নিয়ে সমাজে কিছু কুসংস্কার আছে। অনেক রোগী আছে যে তারা কোন প্রকার উত্তেজিত বা খারাপ আচরণ করে না, তাতে বুঝা অনেক কষ্ট হয়ে যায় যে তার মানসিক রোগ আছে। আবার অনেকের ক্ষেত্রে অনেক লক্ষনের মাধ্যমে বুঝা যায়। তবে বেশিরভাগ মানসিক রোগী সুস্থ মানুষের মতই আচরণ করে থাকে। এ ক্ষেত্রে তাদের রোগ নির্ণয় করা অনেকটা কষ্ট হয়ে যায়।
সমাজে বেশকিছু ধারনা আছে যেমন, কেউ যদি অস্বাভাবিক আচরণ করে তবে ধারনা করা হয় যে তাকে জীন-পরী আচর করেছে, অথবা জাদু টোনা করেছে, অনেকে আবার খারাপ বায়ু শরীরে লেগেছে বলে থাকে, অনেকে ধারনা করে থাকে যে তাকে বান মারা হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রকৃতপক্ষে এই ধারনাগুলো পুরোপুরি ভুল এবং ভিত্তিহীন। অনেক গবেষণায় জানা গেছে এসব ধারনার সাথে মানসিক রোগের সামান্যতম কোন সম্পর্ক নেই।
আসুন জেনে নেই মানসিক রোগের কারনগুলো কি?
১। প্রচণ্ড পরিমানে পারিবারিক অশান্তি, সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা ইত্যাদি কারণে মানসিক রোগ হতে পারে।
২। ব্যাক্তিগত বিভিন্ন সমস্যার কারণে দুশ্চিন্তা, দ্বিধাদ্বন্দ্ব হতে মানসিক রোগ হতে পারে।
৩। অনেক ক্ষেত্রে বংশগত কারণে মানসিক রোগ হতে পারে।
৪। শারীরিক কারনেও মানসিক রোগ হতে পারে। যেমনঃ
- শারীরিক দুর্বলতা,
- টাইফয়েট,
- সিফলিস,
- মাথায় আঘাতজনিত প্রদাহ
- অল্প বয়সে পুষ্টিহীনতা
- ভিটামিনের অভাব
- বিষক্রিয়া
- বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলে মানসিক রোগ হতে পারে।
মানসিক রোগের লক্ষনঃ
১। অতি উত্তেজনাঃ
অতি চঞ্চলতা, প্রলাপ বকা, বিক্ষুব্ধ অথবা আক্রমানত্তক আচরন, জিনিসপত্র ভাংচুর করা ইত্যাদি মানসিক রোগের লক্ষণ।
২। উদাসীনতাঃ
হটাত চুপ হয়ে যাওয়া, সময়মত না খাওয়া, একা একা বির বির করে কথা বলা, কোন কারন ছাড়াই নিজে নিজে হাসা ইত্যাদি মানসিক রোগের লক্ষণ হতে পারে।
৩। অশান্তি/অবসাদঃ
বিষণ্ণতা, কোন কিছু ভাল না লাগা, অস্থিরতা, অনিদ্রা, হাত পা মাথা জ্বালা পড়া করা, নিজেকে অসহায় মনে করা, আত্মহত্যার প্রবনতা থাকা, বুক ধরপাকড় করা, অনেক সময় স্নায়ুবিক দুর্বলতাও থাকতে পারে।
৪। যৌন দুর্বলতাঃ
বিভিন্ন সময় যৌন দুর্বলতা অনেক অশান্তির কারন হয়। অনেক সময় অনেকেই এই বিষয়ে অনেক ভয়ে থাকে যা সমস্যাকে অনেক জটিল করে তোলে। কুসংস্কার এবং ভুল ধারনা থেকে একসময় মানসিক রোগের সৃষ্টি হতে পারে।
উপরোক্ত লক্ষণগুলো ছাড়াও আরও বেশকিছু লক্ষণ আছে, এজন্য অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরী। মনে রাখবেন অন্যান্ন রোগের মতই মানসিক রোগও একটি রোগ সুচিকিৎসায় এই রোগ পুরো ভাল হতে পারে।