**আসসালামু আলাইকুম পাঠক **
আমি আজকে আলোচনা করবো খুবই গুরুত্বপুর্ন একটি বিষয় ও রোগ নিয়ে এবং যার নাম হচ্ছে হাই প্রেসার বা হাইপার টেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ। এই হাইপার টেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ থেকে মুক্তি পাবার কিছু কার্যকরী উপায় ও ঘরোয়া টিপস নিয়ে আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু।
প্রথমে কিছু কথা :
বর্তমানে আমাদের সকলেরই পরিবারে হাইপার টেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ এর রোগী দেখা যায়। সাধারণত মধ্য বয়স ও বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যে এই হাইপার টেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ বেশি দেখা দেয়। হাইপার টেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ মূলত অনেক কারনেই হতে পারে। তবে সবার ক্ষেত্রে একই কারন হয় না। বয়স ও বংশের ভিত্তিতে এর কারন ও ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। কারো ক্ষেত্রে দেখা যায় সঠিক খাদ্য অভ্যাস এর অভাবে হাইপার টেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা দেখা দেয়। হাইপার টেনশন হলে প্রথমে করনীয় হচ্ছে চিকিৎসক এর পরামর্শ নেওয়া এবং চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন করা। তাছাড়া আরো কিছু উপায়েও হাইপার টেনশন বা হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করা যায়। হাইপার টেনশন হলে কিছু খাবার থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। কিছু পরিবর্তন আনতে হবে খাদ্য অভ্যাসে। নিম্নে কিছু খাবার এর নাম দেওয়া হল যেগুলো থেকে হাইপার টেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ এর রোগী কে বিরত থাকতে হবে।
সম্পর্কিত পোস্ট: মানসিক রোগ কি এবং কেন হয় ?
নিষিদ্ধ কিছু খাবার :
- প্রতিদিন ৬ গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া যাবে না।
- এল্কহল, বিয়ার বা মদ্য জাতীয় পানীয় পান থেকে বিরত থাকতে হবে।
- প্রতিদিন এর খাদ্য তালিকায় ক্যাফেন জাতীয় খাদ্য রাখা যাবে না। ক্যাফেন জাতীয় খাবার না খাওয়া সর্বত্তম
- তেল, ঘি, মাখন ও মসলা জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকা উচিত ।
- স্ট্রেস করা থেকে বিরত থাকতে হবে। স্ট্রেস উচ্চ রক্তচাপ এর রোগীদের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
- ডিপ ফ্রায়েড খাবার যেমন : চিকেন ফ্রাই, বিফ। বার্গার, পিজা ও অন্যান্য সকল প্রকার জাংক ফুড থেকে বিরত থাকতে হবে সম্পুর্ন ভাবে।
- ক্রিম, মাংস, ডিমের কুসুম, মাখন ও ফ্রেঞ্চ ফ্রাই সম্পুর্ন ভাবে এড়িয়ে চলতে হবে। এগুলো উচ্চ রক্তচাপ জনিত রোগীর জন্য খুব ক্ষতিকর।
- সল্টেড বাটার ও চিপস জাতীয় খাবার না খাওয়া ভালো। এগুলো ও জাংক ফুড এর ই অংশ।
- টমেটো সস, ভাজা খাবার, আচার, পাউরুটি
ইত্যাদি খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।
মাছের তেল, গরু মাংসের চর্বি কখনোই খাওয়া যাবে না। গরু মাংসের চর্বি উচ্চ রক্তচাপ এর জন্য খুব ক্ষতিকর। যেকোনো চর্বি জাতীয় খাবার ই ক্ষতিকর উচ্চ রক্তচাপ জনিত রোগীর জন্য।
সম্পর্কিত পোস্ট: অদ্ভুত যে ৪ টি কারণে শরীরের ওজোন বেড়ে যায়
হাইপার টেনশন এর রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু খাবার :
- কলা – প্রতিদিন একটি কলা খেতে পারেন।
- রসুন – খালি পেটে ২ কোস রসুন খেতে পারেন।
- কাচা বাদাম – এক মুঠ কাচা বাদাম খেতে পারেন।
- ডাবের পানি – ডাবের পানি সাস্থ্যের জন্য ভালো।
- লেবুর রস – লেবুর রস এ ভিটামিন সি থাকে। প্রতিদিন লেবুর রস খেতে পারেন এতে ভিটামিন সি এর ঘাটতি পোষাবে।
- সবুজ শাক সবজি – প্রতিদিন এর খাদ্য তালিকায় শাক সবজি রাখুন। শাক সবজি সাস্থ্যের জন্য খুব ভালো
- ফ্যাট মুক্ত দই – দই খেতে পারেন সপ্তাহে ২ দিন।
- পটাসিয়াম ও ক্যালসিয়াম আছে এমন সব খাবার খেতে হবে।
- শসা – শসার রস খেতে পারেন। তাছাড়া শসা শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কাটতে সাহায্য করে।
- তিল, মেথি, ধনেপাতা, ফুল কপি, গাজর, ব্লাক চকলেট ইত্যাদি খাবার খেতে পারেন।
হাইপার টেনশন এর রোগী দের জন্য উপরিউক্ত এসব খাবার এ কোনো ক্ষতির আশংকা নেই।
চিকিৎসক এর মতে হাইপার টেনশন নিয়ে কিছু কথা:
চিকিৎসক এর মতে হাইপার টেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ হচ্ছে এমন এক রোগ যা থেকে পরবর্তীতে হ্রদরোগ ও হার্ট ডিসিস এর মতো কঠিন রোগ হয়ে থাকে। সেজন্য প্রত্যেক হাইপার টেনশন এর রোগীকে উচিত তার রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণ রাখা। সেক্ষাত্রে খাবারে বেশ কিছু রেসট্রিকশনস মেনে চললে রোগী খুব ভালো ভাবে জীবন যাপন করতে পারবে। তবে খাদ্য অভ্যাসের মধ্যে প্রথমত খাদ্যে লবণ এর দিক টি বিশেষ ভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। লবন একদমই খাওয়া যাবে না।
সম্পর্কিত পোস্ট: দুশ্চিন্তা দূর করুন সহজেই
নিচে কিছু করনীয় আছে যেগুলো মেনে চললে ও খাদ্য অভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনলে খুব সহজেই হাইপার টেনশন থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে বা আমরা নিজেদের ও পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ দের রক্ষা করতে পারবো
করনীয়:
- খাদ্য অভ্যাস এ বিশেষ পরিবর্তন আনা।
- খাদ্যে লবন না খাওয়া।
- পর্যাপ্ত পানি পান করা।
- তেল চর্বি জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি প্রতিদিন ব্যায়াম করা।
- তাড়াতাড়ি ঘুমানো এবং তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠা।
- কোনো কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা না করা।
উপরিউক্ত নিয়মাবলী মেনে চললে আমরা খুব সহজেই হাইপার টেনশন বা হাই প্রেসার থেকে নিজেদের এবং পরিবারের সজন দের রক্ষা করতে পারবো।
সম্পর্কিত পোস্ট: যে অভ্যাসগুলো মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়
আশা করছি আমার লেখাটি আপনাদের ভালো লাগবে এবং ভালো উপকার পাবেন। আপনাদের দোয়ায় আজকে বিদায় নিচ্ছি। তবে আবারো কথা হবে ভিন্ন কিছু সমস্যা এবং তার প্রতিকার নিয়ে। ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।