আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
আশা করি আপনারা সবাই আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন। আমরা জানি, ইসলামের স্তম্ভ ৫ টি,
১। কালিমা, ২। নামাজ, ৩। রোজা, ৪। হজ্ব, এবং ৫। যাকাত
আজ আমরা নামাজের ফযিলত নিয়ে আলোচনা করব।
ইসলামে নামাজের মর্যাদা অনেক। ইসলামের ২য় স্তম্ভ হচ্ছে নামাজ। যদি কেউ নামাজকে অবহেলা বা অলসতা করে তাহলে সে ব্যাক্তি মুনাফিক, কারন এগুলো মুনাফিকের লক্ষণ। জেনে বুঝে নামায পরিত্যাগ করা কুফুরি। হাদিসে এসেছে, “মুমিন এবং কুফর-শিরকের মধ্যে পার্থক্য হল নামায পরিত্যাগ করা” (মুসলিম)
এ সম্পর্কে আমাদের নবী (সাঃ) বলেন, “আমাদের এবং তাদের মধ্যকার প্রতিজ্ঞা হল নামায। সুতরাং যে ব্যাক্তি নামায পরিত্যাগ করবে সে কাফির হিসেবে গন্য হবে” এই হাদিসখানা ইমাম তিরমিযী বর্ণনা করেছেন ।
নামায বান্দা ও সৃষ্টিকর্তার মাঝে সম্পর্ক স্থাপন করে। এ সম্পর্কে রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “নিশ্চয়ই কেউ যখন নামায আদায় করে তখন সে তার সৃষ্টিকর্তার সাথে নির্জনে কথা বলে” মহান আল্লাহ তায়ালা নামাজকে মেরাজের রাতে আমাদের উপর ফরজ করে দিয়েছেন। আর ইবাদতের মধ্যে নামাযকে সর্বপ্রথম ফরজ করা হয়েছে।
রাসুল (সাঃ) কে কোন আমল উত্তম জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, সময় অনুযায়ী অর্থাৎ সময় মত নামজ আদায় করা” (বুখারী ও মুসলিম)
নামায আদায়ের মাধ্যমে পাপ থেকে পবিত্রতা অর্জন করা যায়। রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “তোমাদের কারোর বাড়ির সামনে যদি প্রবাহমান নদী থাকে এবং সেখানে যদি সে প্রতিদিন পাঁচ বার গোসল করে তাহলে কি তার শরীরে কোন প্রকার ময়লা থাকবে? তখন সাহাবীগণ উত্তর দিলেন, ‘না’। তখন রাসুল (সাঃ) বললেন, তেমনিভাবে মহান আল্লাহ তায়ালা নামাজের মাধ্যমে বান্দার পাপগুলোকে মুছে দেন” (বুখারী ও মুসলিম)
এ ব্যাপারে রাসুল (সাঃ) আরও বলেন, “রাসুল (সাঃ) মৃত্যুকালে তাঁর উম্মাতের জন্য সর্বশেষ অসিয়ত এবং অঙ্গীকার ছিল যেন তারা নামায এবং তাঁদের দাসদাসীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করে” (হাদীসটি ইমাম আহমাদ, নাসায়ী ও ইবনে মাজাহ বর্ণনা করেছেন)
মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের অনেক যায়গায় নামাজের ব্যাপারে খুবই গুরুত্ব দিয়েছেন, নামায এবং নামাজী উভয়কে অনেক সম্মানিত করেছেন। এ ব্যাপারে কয়েকটি আয়াত নিম্নরুপঃ
১। “তোমরা সমস্ত নামাযের প্রতি মনোযোগী হও, বিশেষ করে (মাধ্যম) আসরের নামায। আর আল্লাহর সমীপে কাকুতি-মিনতির সাথে দাঁড়াও”। (সূরা আল বাকারাহ, আয়াত: ২৩৮)
২। “আর তুমি নামায প্রতিষ্ঠিত কর, নিশ্চয়ই নামায অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে”(সূরা আল-আনকাবুত, আয়াত: ৪৫)
৩। “হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন” (সূরা আল বাকারা , আয়াত: ১৫৩)
৪। “নিশ্চয় নামায মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয” ( সূরা আন নিসা, আয়াত: ১০৩)
নামায পরিত্যাগকারীর জন্য আল্লাহর আযাব অপরিহার্য।
৫। “অতঃপর তাদের পরে আসল এমন এক অসৎ বংশধর যারা সালাত বিনষ্ট করল এবং কুপ্রত্তির অনুসরণ করল। সুতরাং তারা শীগ্রই জাহান্নামের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে” (সূরা মারয়াম, আয়াত: ৫৯)
আসুন আল্লাহর বিধান মোতাবেক জীবন পরিচালনা করি, পার্থিব জীবন ও পরকালিন উভয় জীবনে সফলতা অর্জন করি। নামায জান্নাতের চাবি, আসুন আমরা সবাই সেই চাবি হাসিল করি এবং জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে যেন মুক্তি লাভ করতে পারি।